বৃষ্টি হলেই রাস্তা যেন মরণফাঁদ!

বৃষ্টি হলেই রাস্তা যেন মরণফাঁদ!

নিজস্ব প্রতিনিধি:

 

সামান্য বৃষ্টি হলেই নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলার সড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়ে যায়। দেখে বোঝার উপায় নেই সেগুলো পাকা, না কাঁচা সড়ক। গত সোমবার বৃষ্টির পানিতে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে কাদামাটির স্তূপ। চলমান ট্রাক-ট্রাক্টর ও ট্রলি থেকে মাটি পড়ে পাকা সড়কগুলোর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে মাটি ভিজে সড়ক কাদায় একাকার। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর কতিপয় অবৈধ ট্রাক্টর-ট্রলি পাকা রাস্তা দিয়ে নিয়মিত মাটি ওঠানোয় এই কাদার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার রাতে হঠাৎ বৃষ্টিতে নওগাঁর অন্যান্য উপজেলাসহ আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নওগাঁর পূর্ব ঢাকা বাইপাস রোড থেকে রানীনগর হয়ে আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ হাটসংলগ্ন জাতআমরুলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়ক এখন কাদা সড়কে পরিণত হয়েছে। পথচারীরা কাদামাটি গায়ে লাগার ভয়ে চলাচল করতে পারছেন না। বিশেষ করে দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন মোটরসাইকেল চালকরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। সড়কের পাশের লোকজন ও ব্যবসায়ীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। ট্রাক্টরের ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বহন করা মাটি সড়কে পড়ে। বেশ কিছুদিন ধরে ধুলায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছিল। এখন বৃষ্টি হওয়ায় পাকা রাস্তাগুলো কাদাময় হয়ে পড়েছে। চলাচলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে বেড়েছে দুর্ভোগ।

পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলা থেকে ভবানীপুর হাটে আসা বাইসাইকেল চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সপ্তাহে দুই দিন শনিবার-মঙ্গলবার ভবানীপুর হাট থেকে কাঁচামাল সাইকেলে করে নিয়ে আসি। আজ মাল নিয়ে আসতে যে কী কষ্ট হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এমনকি রাস্তার মাঝে মালবোঝাই সাইকেল নিয়ে কয়েকবার পড়েও গেছি।’

রাস্তায় চলাচল করা মোটরসাইকেল আরোহী সনজিৎ সরকার ও রনি বলেন, ‘ইটভাটার কাজে নিয়োজিত যানবাহন থেকে রাস্তায় মাটি পড়ে যায়। সেই মাটি রোদের সময় রাস্তায় শুকিয়ে ধুলা আর বৃষ্টি হলেই কাদায় পরিণত হয়। দেখে বোঝার উপায় থাকে না, এটা কার্পেটিং রাস্তা। এতে সড়কগুলোতে চলাচল করতে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।’

তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলোতে যদি এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না যায়, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বিশেষ করে আগামী বর্ষা মৌসুম তো আছেই। এ জন্য এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে জানতে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, ‘সড়কে এগুলো আমরা যখন দেখি, তখন নোটিশ করি। এ ছাড়া এই গাড়িগুলো যখন রাস্তায় ওঠে, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও একটা দায়িত্ব আছে। তবে সবার সচেতন হওয়া দরকার।’

 

আপনি আরও পড়তে পারেন